এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সম্মানীয় মানুষ হচ্ছেন মা। মাত্র এক অক্ষরে শব্দটি গঠিত হলেও এর ব্যাপকতা সাগরের চেয়েও বিশাল। এই শব্দের চেয়ে অতি আপন শব্দ আর নেই। মা হচ্ছেন, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অতন্ত্র প্রহরী। সন্তানের জন্য সর্বদা জেগে থাকেন। সুখে- দুঃখে,হাসি -কান্নায়, জীবন গঠনে সর্বদা সচেষ্ট থাকেন। মায়ের জন্যই পৃথিবী এত সুন্দর। জন্মের পর মানুষের মুখে বা প্রত্যেক সন্তানের মুখে মা শব্দই বেশি উচ্চারিত হয়।
প্রতি বছরই ক্যালেন্ডার ধরে দিবসটি আসে, চলেও যায়। তাই ত এই দিনটিতে মায়ের জন্য বিশেষ কিছু করেন সকল সন্তানগন, মা’কে ধন্যবাদ জানান, গিফট দেন, মা’কে ভালোবেসে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসা প্রকাশ করেন।
মে মাসের প্রত্যেক দ্বিতীয় রবিবারে মায়েদের সম্মানে পালন করা হয় বিশ্ব মাতৃ দিবস। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে না হচ্ছে না। ১৪ মে রবিবার পালন করা হবে এই দিনটি। কিন্তু প্রত্যেক বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারে কেন এই দিনটি পালন করেন এবং দিনটি কীভাবে এলো? কেন পালন করা হয় এই মা দিবস? এর গুরুত্ব কী, বিশ্ববাসী জানেন কি? তা হয়তো অনেকের অজানা।
ইতিহাস ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বলছে, ১৯০৭ সালের ১২ মে প্রথম আমেরিকার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রাফটন শহরে 'মাদার্স ডে' বা মা দিবস পালিত হয়।
এই দিনটি পালনে রয়েছে এক ইতিহাস। ভার্জিনিয়ায় অ্যান নামে এক শান্তিবাদী সমাজকর্মী ছিলেন। তিনি নারী অধিকার নিয়ে কাজ করতেন। তিনি ‘মাদারস ডে ওয়ার্ক ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ছোট ছোট ওয়ার্ক ক্লাব বানিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের এগিয়ে নিতে চেষ্টা করতেন। নারীদের স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করতেন। এবং অ্যান ছিলেন খুবই ধর্মপ্রাণ।
অ্যানের একটি মেয়ে ছিল, যার নাম আনা মারিয়া রিভস জার্ভিস।
একদিন ছোট মেয়ের সামনেই অ্যান হাত জোড় করে বলেছিলেন- 'আমি প্রার্থনা করি, একদিন কেউ না কেউ, কোনো মায়েদের জন্য একটা দিন উৎসর্গ করুক। কারণ তারা প্রতিদিন মনুষ্যত্বের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে চলেছেন। এটি তাদের অধিকার।
মায়ের সেই প্রার্থনা হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যায় আনার। অ্যানের মৃত্যুর দিনটিকে সারাবিশ্বের প্রতিটি মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন তিনি। তার পর থেকে মায়েদের প্রতি সম্মানে পালিত হয়ে আসছে মা দিবস।
১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মিঃ উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে ‘মা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেন।
এর পর থেকে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবস হিসাবে উদযাপন করা হয়ে থাকে। তবে অনেক দেশই অন্যদিনকে উৎসর্গ করেছে মায়েদের জন্য। সাধারণত মার্চ কিংবা মে মাস-তেই পালিত হয় 'মাদার্স ডে'।
বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৪০টিরও বেশি দেশে “মা দিবস” উৎসব পালন করে থাকে।
আমাদের সমাজে বা রাষ্ট্রে মাঝে মাঝে দেখা যায় একসময় মায়ের আর মূল্য থাকেনা। বোঝা হয়ে যায় সন্তানের কাছে। জায়গা হয়না ঘরের এক কোণে। বৃদ্ধাশ্রম হয় তাঁর ঠিকানা। এমন পরিণতি আমার মায়ের না হোক। এই হোক সকল সন্তানের অঙ্গীকার।
সকল মা সন্তানের কাছে নিরাপদে থাকুক। সুখী হোক।
মা দিবস সফল হোক।
শুধু একদিন নয়, মায়ের জন্য ভালবাসা হোক প্রতিদিন। তবু মা দিবসের এই বিশেষ দিনটা আমরা মায়ের জন্য সেলিব্রেট করতেই পারি। পৃথিবীর সকল মায়েদের জন্য রইলো মা দিবসের শুভেচ্ছা।
♥️ HAPPY MOTHER'S DAY ♥️