বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভ তিথিতেই ভগবান বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন, সিদ্ধিলাভ করেন এবং মহাপরি নির্বাণ লাভ করেন। বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বৈশাখী পূর্ণিমা হল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রতম উৎসব। এই পুণ্যোৎসব বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয়। বৈশাখী পূর্ণিমা দিনটি বুদ্ধের ত্রিস্মৃতি বিজড়িত। এই পবিত্র তিথিতে বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেছিলেন, বোধি বা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন এবং মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন।
বৈশাখী পূর্ণিমা বিশেষ পূর্ণ তিথি। এই পূর্ণ তিথিতে সনাতন ধর্মের নবম অবতার এবং বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক ভগবান গৌতম বুদ্ধ নেপালের লুম্বিনীনগরে রাজা শুদ্ধধন এবং মায়াদেবীর পুত্র রূপে ধরা ধামে অবতীর্ণ হন। কপিলাবস্তুনগরে বড় হয়ে ওঠেন। রাজপুত্র হিসাবে সমস্ত বিলাসিতা, স্ত্রী যশোদা পুত্র রাহুলও তাঁকে সংসারের মায়ায় আবদ্ধ করতে পারেনি।
সন্ন্যাসী এবং শব দেখে তাঁর জীবন সম্পর্কে ধারণা পরিবর্তন হয়। জরা, ব্যাধি এবং মৃত্যুকে জয় করার উদ্দেশ্যে, স্ত্রী, পুত্র, বিলাসিতা, রাজধর্ম, রাজ ঐশ্বর্য ত্যাগ করে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মের পথপ্রদর্শক হিসাবে হিন্দু ধর্মের ইতিহাসে চিরস্মরণীয়। বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভ দিনটি তিনটি স্মৃতি বিজড়িত। এই শুভ তিথিতেই ভগবান বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন, সিদ্ধিলাভ করেন এবং মহাপরি নির্বাণ লাভ করেন।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে– পূর্ণিমা তিথি আরম্ভ
বাং– ২০ বৈশাখ, বৃহস্পতিবার।
ইং– ৪ মে, বৃহস্পতিবার।
সময়– রাত ১১টা ৪ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড।
পূর্ণিমা তিথি শেষ–
বাং – ২১ বৈশাখ, শুক্রবার।
ইং– ৫ মে, শুক্রবার।
সময়– রাত ১০টা ৪৯ মিনিট ১৬ সেকেন্ড।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশে এই দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতি বছরই পালিত হয়। বৌদ্ধধর্মের উৎসব হলেও ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশে সর্বসাধারণের জন্য এই দিনটি সরকারি ছুটি থাকে। প্যাগোডায় প্যাগোডায় চলতে থাকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দিবস উদ্যাপনের যাবতীয় কার্যক্রম। এছাড়া বিভিন্ন গ্রাম ও বিহারে এই দিনে মেলা বসে। সবচেয়ে বড় মেলাটি বসে চট্টগ্রামের বৈদ্যপাড়া গ্রামে, যা বোধিদ্রুম মেলা নামে সমধিক পরিচিত।